সংবিধান সংস্কার ও গণতন্ত্রের অগ্রগতিতে ঐক্যের আহ্বান
- By Jamini Roy --
- 27 December, 2024
বাংলাদেশে সংবিধান সংস্কার এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য এবং দৃঢ় সংকল্প থাকা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি আরও বলেন, জনগণ এবং রাজনৈতিক শক্তির সম্মিলিত উদ্যোগ ছাড়া গণতন্ত্রকে সুসংহত করা সম্ভব নয়।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ আয়োজিত ‘ঐক্য, সংস্কার, নির্বাচন’ শীর্ষক সংলাপে অংশ নিয়ে অধ্যাপক রীয়াজ এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা, নাগরিক অধিকার, এবং ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ চায়। এই চাওয়াগুলোকে ধারণ করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “শুধু আইন সংস্কারই যথেষ্ট নয়। সংবিধান প্রণয়ন ও সংশোধনের মাধ্যমে সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করা যাবে না, যদি না রাজনৈতিক দলগুলো এই সংস্কার প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। রাজনৈতিক শক্তির এই সংকল্প ছাড়া গণতন্ত্রকে টেকসই করা সম্ভব নয়।”
সংলাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সংবিধান সংস্কার ও নির্বাচনের প্রস্তুতি একসঙ্গে এগিয়ে নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, “সংস্কারবিহীন নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্বাচন আয়োজন করবে নির্বাচন কমিশন। তবে নির্বাচন তারিখ নির্ধারণের আগে সংস্কার কার্যক্রমে সকল নাগরিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।”
ড. ইউনূস আরও বলেন, “নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তোলা এবং সংস্কারের রূপরেখা তৈরি করাই হবে মূল কাজ। সংস্কারের কাজ অব্যাহত রেখে নাগরিকদের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য ও সমতাভিত্তিক সমাজ নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।”
অধ্যাপক আলী রীয়াজ ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস উভয়েই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্যের ওপর জোর দেন। তাদের মতে, দেশের গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক কাঠামোকে এগিয়ে নিতে এই মুহূর্তে ঐকমত্য গড়ে তোলা এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম হাতে নেওয়া অপরিহার্য।
সংবিধান সংস্কার প্রক্রিয়া কেবল আইন বা বিধি সংশোধনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী এবং অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়া, যেখানে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ এবং জনগণের সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন। রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে ঐক্য এবং সংকল্পই পারে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে মজবুত করতে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সমতাভিত্তিক সমাজ নিশ্চিত করতে।